সোমবার, ১৯-মে ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন
  • অপরাধ
  • »
  • নুসরাত ফারিয়া ফ্যাসিস্টের সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন: পিপি  

নুসরাত ফারিয়া ফ্যাসিস্টের সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন: পিপি  

shershanews24.com

প্রকাশ : ১৯ মে, ২০২৫ ০৬:০৬ অপরাহ্ন

শীর্ষনিউজ, ঢাকা: অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন সিএমএম আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। সোমবার (১৯ মে) আদালতে তার মামলার শুনানির সময় পিপি একথা জানান। 

রাজধানীর ভাটারায় এনামুল হক নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে একটি মাইক্রোবাসে আদালতে আনা হয়। তাকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়।

সকাল ১০টার পর নুসরাত ফারিয়াকে আদালতের কাঠগড়ায় ওঠানোর জন্য হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয়। তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট। পরেছিলেন বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। নারী পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে কড়া পাহারায় নুসরাত ফারিয়া সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় ওঠেন। আদালতের কাঠগড়ায় তোলার পর একজন পুলিশ সদস্য তাঁর মাথায় পরানো হেলমেটটি খুলে ফেলেন। তখন সময় সকাল ১০টা ২০ মিনিট।

শুনানির শুরুতে নুসরাতের আইনজীবী মোহাম্মদ ইফতেখার হাসান আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমার মক্কেল একজন সুপরিচিত অভিনেত্রী। অভিনয় তাঁর পেশা। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন। শুধু তা–ই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নুসরাত ফারিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনের পক্ষেও লেখালেখি করেছিলেন, সহমর্মিতাও প্রকাশ করেছিলেন।’

নুসরাতের আইনজীবীর বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন সিএমএম আদালতের প্রধান পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, নুসরাত ফারিয়া অভিনেত্রী, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী।’

পিপি আরও বলেন, ‘নুসরাত ফারিয়া শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বায়োপিকে অভিনয় করেছিলেন। রুপালি পর্দায় তিনি শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। অভিনয় করা কোনো দোষের কিছু নয়। কিন্তু তিনি পরবর্তী সময়ে বলেছিলেন, প্রতিটা ঘরে শেখ হাসিনা রয়েছে। এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে তিনি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে খুশি করতে চেয়েছিলেন।’

সংরক্ষিত নারী আসনে নুসরাত ফারিয়া সংসদ সদস্য হতে চেয়েছিলেন বলেও আদালতের কাছে অভিযোগ করেন পিপি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী হওয়ার কারণে নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

পিপি আদালতকে আরও বলেন, ‘আমরা আরও একজন অভিনেতাকে খুঁজছি। তিনি হলেন রুপালি পর্দার নায়ক ফেরদৌস। তিনি ভোট চুরি করে এমপিও হয়েছিলেন। ফ্যাসিস্ট শাসকেরা যেটা করেন, যেসব শিল্পী, যেসব অভিনেতার পরিচিতি আছে, তাঁদের ফ্যাসিস্টরা কাজে লাগান। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাও সেই একই কাজ করেছেন। নুসরাত ফারিয়া, ফেরদৌসদের মতো অভিনেতা, শিল্পীদের কাছে টেনেছিলেন। তাঁরাও ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসন আমল দীর্ঘায়িত করতে সহযোগিতা করেছেন।’

নুসরাত ফারিয়া কেবল ফ্যাসিস্টের সহযোগী নন, তিনি অনলাইনে জুয়ার প্রমোট করছেন বলেও আদালতকে জানান পিপি। বলেন, ‘তিনি একটি জুয়ার অ্যাপসের শুভেচ্ছাদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি যুবসমাজকে বিভ্রান্ত করছেন।’

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পিপি যখন একের পর এক যুক্তি তুলে ধরেছিলেন, তখন নুসরাত ফারিয়া ছিলেন বিমর্ষ। তিনি কাঠগড়ায় দুই হাত রেখে পিপির বক্তব্য শুনছিলেন।

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন চলাকালে যখন আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থী, ছাত্র–জনতা আন্দোলন করছিলেন, তখন একদল শিল্পী, অভিনেতা, অভিনেত্রী তাঁদের শরীরে গরম পানিও ঢেলে দিয়েছিলেন। তাঁরা অনলাইনে গ্রুপ খুলেছিলেন। জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।’ 

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ২২ মে নুসরাত ফারিয়ার জামিনের বিষয়ে আদেশ হবে বলে জানান। 

(শীর্ষনিউজ/ক.ম)